বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর পালরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার, কাজের ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারের গাফিলতি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও খেলাধুলায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইতি রাণী অভিযোগ করে বলেন, “ভবনের কাজ সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ও খেলাধুলায় বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।” তিনি আরও জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, এখন থেকে নিয়ম মেনে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএম কলেজের শিক্ষার্থী মো. সজিব মিয়া বলেন, “ভবনটির কাজের শুরু থেকেই অনিয়ম চলছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে, ভিম তৈরির পর একদিনও পানি দেওয়া হয়নি। ফলে ভবনটি কতটা টেকসই হবে তা নিয়ে আমাদের শঙ্কা রয়েছে।” একই এলাকার বাসিন্দা রকিব গাজীও অভিযোগ করেন যে, নিম্নমানের ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরেক বাসিন্দা ম. মিন্টু মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য বিদ্যালয়ের ভবন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হলেও শুধুমাত্র ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে উত্তর পালরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে ধীরগতিতে চলছে। ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কিন্তু দুই মাসে এত কাজ শেষ করা সম্ভব কিনা তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. আতিকুর রহমান বলেন, “নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। পাথরের কোন নিম্নমান বলে কিছু নেই। সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে, তবে ভবন নির্মাণের কাজটি যথেষ্ট ভালো হয়েছে।”
অন্যদিকে, উপজেলা প্রকৌশলী মো. অহিদুর রহমান বলেন, “আমি আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তবে অভিযোগের বিষয়ে ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, ঠিকাদারের এমন গাফিলতি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি যেমন বিলম্বিত হচ্ছে, তেমনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিতব্য ভবনটি টেকসই ও নিরাপদ নাও হতে পারে। এ বিষয়ে দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা।
Leave a Reply