
দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু)। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে বাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এরপর আর কোনো নির্বাচন আয়োজন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রায় আড়াই দশক ধরে ছাত্র সংসদ না থাকায় শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবি ও অধিকারের বিষয়ে কথা বলার কোনো প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছে না। ফলে আবাসন সংকট, শিক্ষাব্যয় নিয়ন্ত্রণ, উন্নত ডাইনিং সুবিধা, সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ সৃষ্টি ও ছাত্র-উপবৃত্তি বৃদ্ধির মতো বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রশাসনের কাছে পৌঁছায়নি। যদিও প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংসদ ফি নেওয়া হচ্ছে, তবে বাকসুর জন্য বরাদ্দ ১৬টি কক্ষ এখন অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাকসু নির্বাচন নিয়ে মার্স্টাসের শিক্ষার্থী আল সাউদ সৌহার্দ্য বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর অধিকার এবং যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য একটি অনন্য প্লাটফর্ম। গত ২৭ বছর ধরে বাকৃবিতে কোনো ছাত্র সংসদ তথা বাকসু নির্বাচন হয়নি। ফলে, বিগত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা যুগোপযোগী শিক্ষানীতি, আবাসন সংকট, উন্নত ডাইনিং সুবিধা, ছাত্র উপবৃত্তির হার বৃদ্ধি, সঠিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চর্চা এবং অন্যান্য ন্যায্য অধিকার আদায়ে সংগঠিত অবস্থানে যেতে পারেনি। তাই বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি সুষ্ঠু বাকসু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
মার্স্টাস শিক্ষার্থী মো. মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘ডাকসু হচ্ছে, রাকসু হচ্ছে, জাকসুও হচ্ছে বাকসু কি দোষ করলো ? বাকসু কি হবে না? এই বিশ্ববিদ্যালয় ধীরে ধীরে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাচ্ছে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বাকৃবি শাখার সাধারণ সম্পাদক জায়েদ হাসান ওয়ালিদস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দাবি উত্তোলন ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বাকসু গঠন করা হয়েছিলো। কিন্তু ২৭ বছর যাবৎ তা বন্ধ। বাকসু নিয়মিত থাকলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব থাকতো। প্রশাসন নিশ্চয়ই এমন অগণতান্ত্রিকভাবে এসব নীতি বাস্তবায়ন করতে পারতো না। বাকসু নির্বাচন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দ্বারা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও সংকট নিরসনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে তাদের সংকট ও পরিকল্পনা উত্থাপন করতে পারবে।’
Leave a Reply